পানি ছাড়াই আমাদের শরীর মূল্যহীন। আমাদের কোষ-কলার কাজকর্ম সঠিকভাবে চালিয়ে যেতে পানি অপরিহার্য। শরীরের তাপতাত্রা ঠিক রাখতে পানির গুরুত্ব অপরিসিম। শারীরিক সুস্থ্যতা বজায় রাখতে দেহ সঞ্চালন করতে পানির গুরুত্ব অপরিসিম।


আমাদের  বয়স ধরে রাখতে ও ত্বক টানটান রাখতে পানির ভূমিকা অনস্বীকার্য। মূলত আমরা এককথায় বলা যায়, পানি ছাড়া আমাদের দেহযন্ত্রটি অচল হয়ে পড়বে।
আমরা হয়তো নিজেদের মতে ভাবি বা চিন্তা করি দৈনিক কতটা পানি প্রত্যেকের পান করা উচিত? সাধারণত দিনে প্রত্যেকের তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার পানি পান করা উচিত। এটা আমরা সাধারন ভাবেই জানি কিন্ত পানি গ্রহনে আমরা এগুলো কেউ খেয়াল করি না।

পানি পান করা আমাদের  যতটা জরুরি ঠিক ততটা জরুরি পরিমিত পরিমাণ ভাবে আমাদের সতর্কতার সাথে পানি পান করা। পানি উপকারী বলে মাত্রাতিরিক্ত পানি পান করাটাও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে তাই আমাদের সব দিক থেকে সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে হবে।।
বিজ্ঞানীদের ধারনা অনুযায়ী প্রতিদিন আমাদের  ২৪০ মিলিলিটার মাপের ৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত, যা কিনা গড়ে দুই লিটারের মতো হতে পারে। বিজ্ঞানীদের মতেও আমাদের দৈনিক ২-৩ লিটার পানি পান করা উচিৎ।

আমাদের গুরুজন রা অনেকেই বলে থাকেন যে, পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করা উচিত।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বের বৃহত্তম মূল্যবান দেশের ন্যাশনাল অ্যাকাডেমিস অব সায়েন্সের গবেষকরা বলছেন, এ তথ্যের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। গ্লাস মেপে পানি পান করার বিষয়টি দেহে পানি সরবরাহের দুই টি  বড় উৎসকে উপেক্ষা করে।

আমরা যে সকল খাদ্যভাস গ্রহন করে থাকি সেই সকল খাদ্য পানি বিদ্যমান। আপনার পানি ঘাটতি রয়েছে কিনা তা বোঝার জন্য গবেষকরা সহজ একটি পদ্ধতি বলে দিয়েছেন যার মাধ্যমে আপনি নিজেই পরিক্ষা করে জানতে পারবেন আপনার শরীরে পানির ঘাটতি আছে কি না।
যদি প্রস্রাবের রং হলুদ বা কমলা হয়ে আসে, তবে পানি পান করুন। আর দেহের ঘাম ঝরলে পানি পান করতে ভুলবেন না।

আমরা খাদ্য গ্রহনের পর পানি বেশি করে খেয়ে থাকি। কেউ কেউ বলেন, খাবার সময়ে পানি পান করলে নাকি খাদ্য ভালো হজম হয় না। মূলত এই কথা সমস্ত রূপে মিথ্যা।
পানি আপনার শরীরের ঘাতটি এবং দেহের সকল ধরনের অভাব দূর করতে সহায়তা করে তাই আপনি যেকোন মূহূর্তে পানি খেতে পারেন।

তাহলে চলুন যেনে নিই সঠিক ভাবে পানি পান করার উপকারিতাঃ

১. বেশি পানি বা দেহের পরিমিত পানি পান করার ফলে দেহের শক্তি বৃদ্ধি হয়। আমাদের শরীরে যেসব কোষ আছে তাদের কাজ করার জন্য পানির প্রয়োজন পড়ে। এবং তা পরিমিত ভাবে পানি পান করলে দেহের অভাবনীয় দূর করে থাকে এবং আমাদের দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে।

২. বেশি পানি পান করার ফলে বা সঠিক ভাবে পানি পান করার ফলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে । আমাদের মস্তিস্ক সঠিক ভাবে কাজ করার জন্য তরল বেশি প্রয়োজন হতে পারে। আর আমরা পানি পান করার ফলে সেই তরল পায় যার ফলে আমাদের মস্তিস্কের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি। তাই স্মৃতিশক্তি বারানোর জন্য আমাদের পরিমিত ভাবে পানি পান করা প্রয়োজন।

৩.  সঠিক ভাবে পানি পান করার ফলে মনোযোগ বৃদ্ধি করে। প্রকৃতপক্ষে,  আমাদের যেহেতু আমাদের শরীর প্রচুর পানি দ্বারা তৈরি, তাই এটা সহজেই কার্জক্রম যে শরীরকে পুনরুজ্জীবিত করতে, পরিষ্কার করতে ও এর সিস্টেমকে খাওয়াতে প্রতিনিয়ত পানি প্রয়োজন হয়ে থাকে। আর তা বেশি পানি পান করার ফলে শরীরে অভাব মোচন হয় যার ফলে আমাদের মনোযোগ সৃষ্টি করে।

৪. পরিমিত বা বেশি পানি পান করার ফলে হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। আমাদের বিভিন্ন ফাস্ট ফুড খাদ্য গ্রহনের ফলে এসিডিটি হয়ে যায় আর তা ঠিক করতে বেশি পানি পার করলে এসিডিটি কমে যায় যার ফলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।

৫. বেশি বা অতিরিক্ত পানি পান করার ফলে ত্বক ফর্সা করে । অতিরিক্ত পানি পান করার ফলে ত্বক হাইড্রেশন থেকে বড় উপকার পেয়ে থাকে। যার ফলে ত্বক ফর্সা এবং উজ্জ্বল করে তোলে।